
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখল ও হামলার বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করা হয়। কয়েকটি সংস্থা ও সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন জাতীয় নাগরিক সমন্বয় সেল’ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল, অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সহসভাপতি তবারক হোসেইন। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী জিতেন্দ্র চন্দ্র সিং, ভাকারাম সিং ও অকুল চন্দ্র সিং উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ২৯ জুলাই প্রথম আলোতে ‘সংখ্যালঘুদের জমি দখলে নেমেছেন সাংসদ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয়, ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ দবিরুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে মাজহারুল ইসলাম ওরফে সুজন স্থানীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখল করে তাদের ওপর হামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছেন। ওই সাংসদ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়িয়ায় রনবাগ ইসলামী টি এস্টেট কোম্পানি লিমিটেড নামে চা-বাগান গড়ে তুলেছেন।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুব্রত চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত বছরের ২৪ ও ২৫ নভেম্বর অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন জাতীয় নাগরিক সমন্বয় সেলভুক্ত সংগঠনের নাগরিক প্রতিনিধিরা পাড়িয়া ইউনিয়ন পরিদর্শন করেন। প্রতিনিধিদলে সুলতানা কামাল, সুব্রত চৌধুরী, সারা হোসেনসহ জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, তিন দিকে ভারতীয় সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকায় সাংসদ দবিরুল ইসলাম যে চা-বাগান গড়ে তুলেছেন, তার মধ্যে ১০টি হিন্দু পরিবারের ৩৫ একর চা-বাগান ও আবাদি জমি রয়েছে। এর মধ্যে অকুল চন্দ্র সিংয়ের এক বিঘা জমি অন্য জমিতে যাওয়ার পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, সাংসদের ছেলে মাজহারুল সংখ্যালঘুদের জমি সাংসদের কাছে বিক্রির জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন। ১৯ জুন সাংসদের ছেলে মাজহারুলের নেতৃত্বে ২৫-৩০ সন্ত্রাসী নিয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করা হয়। পুলিশ এসব জেনেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘শুধু ঠাকুরগাঁও নয়, সারা দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখলের একের পর এক এ ধরনের ঘটনা এবং তাতে প্রশাসনের নীরব ভূমিকা দেখে আমরা হতবাক হচ্ছি।’
লিখিত বক্তব্য শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে সুলতানা কামাল বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের ঘটনায় সাংসদ দবিরুল ইসলাম সরাসরি জড়িত।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সাংসদ ও ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দবিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এসবই কল্পিত অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তদন্তও হয়েছিল। কোনো অভিযোগের সত্যতা মেলেনি।’ তিনি বলেন, ‘সুলতানা কামাল আপারা ঘটনাস্থলে যাননি। তাঁরা একটা হিন্দুপাড়ায় বসে ছিলেন। সে পাড়ার লোকেরা আবার যাত্রা করেন। তাঁরা কেঁদে-কেটে যা বলেছেন, সুলতানা কামাল আপারা তাই বিশ্বাস করে এখান থেকে গেছেন।’
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিগত কয়েক মাসে ঝালকাঠি, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, মুন্সিগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসবের সঙ্গে সরকারের সাংসদ-মন্ত্রীর জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথ বলেন, পিরোজপুরের সাংসদ এ কে এম এ আউয়ালও একইভাবে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করছেন। দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ক্ষত্রিয় পরিবারের ৫৫টি পরিবারের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িত সাংসদ ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
যোগাযোগ করা হলে সাংসদ এ কে এম এ আউয়াল বলেন, এসব অভিযোগ ঠিক নয়। স্থানীয় কারও কোনো অভিযোগ নেই। ঢাকায় বসে তাঁরা অভিযোগ তুলছেন।
তবে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে গণশিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অন্তত সাতবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা না করে ঢালাও অভিযোগ করা হচ্ছে। সত্য ঘটনা যদি হয়ে থাকে তবে তাঁরা আইনের আশ্রয় নিচ্ছেন না কেন? তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পুলিশ বা সরকারের কাছে এলে সরকার গুরুত্ব দিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।
সংবাদসম্মেলনেতথ্য
সংখ্যালঘুদেরজমিদখলেসাংসদওমন্ত্রীরসংশ্লিষ্টতারঅভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখলের বেশির ভাগ ঘটনায় প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা, সাংসদ এমনকি কোনো কোনো জেলায় মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এসেছে।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখল ও হামলার বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করা হয়।কয়েকটি সংস্থা ও সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন জাতীয় নাগরিক সমন্বয় সেল’ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল, অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সহসভাপতি তবারক হোসেইন।সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী জিতেন্দ্র চন্দ্র সিং, ভাকারাম সিং ও অকুল চন্দ্র সিং উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ২৯ জুলাই প্রথম আলোতে ‘সংখ্যালঘুদের জমি দখলে নেমেছেন সাংসদ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।ওই প্রতিবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয়, ঠাকুরগাঁও–২ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ দবিরুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে মাজহারুল ইসলাম ওরফে সুজন স্থানীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখল করে তাদের ওপর হামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছেন।ওই সাংসদ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়িয়ায় রনবাগ ইসলামী টি এস্টেট কোম্পানি লিমিটেড নামে চা–বাগান গড়ে তুলেছেন।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুব্রত চৌধুরী।লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত বছরের ২৪ ও ২৫ নভেম্বর অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন জাতীয় নাগরিক সমন্বয় সেলভুক্ত সংগঠনের নাগরিক প্রতিনিধিরা পাড়িয়া ইউনিয়ন পরিদর্শন করেন।প্রতিনিধিদলে সুলতানা কামাল, সুব্রত চৌধুরী, সারা হোসেনসহ জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।অনুসন্ধানে দেখা যায়, তিন দিকে ভারতীয় সীমান্ত–সংলগ্ন এলাকায় সাংসদ দবিরুল ইসলাম যে চা–বাগান গড়ে তুলেছেন, তার মধ্যে ১০টি হিন্দু পরিবারের ৩৫ একর চা–বাগান ও আবাদি জমি রয়েছে।এর মধ্যে অকুল চন্দ্র সিংয়ের এক বিঘা জমি অন্য জমিতে যাওয়ার পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, সাংসদের ছেলে মাজহারুল সংখ্যালঘুদের জমি সাংসদের কাছে বিক্রির জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন।১৯ জুন সাংসদের ছেলে মাজহারুলের নেতৃত্বে ২৫–৩০ সন্ত্রাসী নিয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করা হয়।পুলিশ এসব জেনেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘শুধু ঠাকুরগাঁও নয়, সারা দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখলের একের পর এক এ ধরনের ঘটনা এবং তাতে প্রশাসনের নীরব ভূমিকা দেখে আমরা হতবাক হচ্ছি।’
লিখিত বক্তব্য শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে সুলতানা কামাল বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের ঘটনায় সাংসদ দবিরুল ইসলাম সরাসরি জড়িত।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সাংসদ ও ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দবিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এসবই কল্পিত অভিযোগ তোলা হয়েছে।এ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তদন্তও হয়েছিল।কোনো অভিযোগের সত্যতা মেলেনি।’ তিনি বলেন, ‘সুলতানা কামাল আপারা ঘটনাস্থলে যাননি।তাঁরা একটা হিন্দুপাড়ায় বসে ছিলেন।সে পাড়ার লোকেরা আবার যাত্রা করেন।তাঁরা কেঁদে–কেটে যা বলেছেন, সুলতানা কামাল আপারা তাই বিশ্বাস করে এখান থেকে গেছেন।’
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিগত কয়েক মাসে ঝালকাঠি, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, মুন্সিগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।এসবের সঙ্গে সরকারের সাংসদ–মন্ত্রীর জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথ বলেন, পিরোজপুরের সাংসদ এ কে এম এ আউয়ালও একইভাবে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করছেন।দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ক্ষত্রিয় পরিবারের ৫৫টি পরিবারের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন হচ্ছে।এর সঙ্গে জড়িত সাংসদ ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
যোগাযোগ করা হলে সাংসদ এ কে এম এ আউয়াল বলেন, এসব অভিযোগ ঠিক নয়।স্থানীয় কারও কোনো অভিযোগ নেই।ঢাকায় বসে তাঁরা অভিযোগ তুলছেন।
তবে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে গণশিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অন্তত সাতবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা না করে ঢালাও অভিযোগ করা হচ্ছে।সত্য ঘটনা যদি হয়ে থাকে তবে তাঁরা আইনের আশ্রয় নিচ্ছেন না কেন? তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পুলিশ বা সরকারের কাছে এলে সরকার গুরুত্ব দিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।